খবরের বিস্তারিত...


অসভ্য রাষ্ট্র মায়ানমারকে নৃশংসতার জন্য ইতিহাস ক্ষমা করবে না-ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সভাপতি

সেপ্টে. 17, 2017 সাংগঠনিক খবর

ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সভাপতি মনির হোসাইন বলেছেন – একটি বন্য প্রাণী অভুক্ত থাকলে যেখানে মানবতা নির্লিপ্ত থাকেনা, সেখানে অসংখ্য রোহিঙ্গার অস্বাভাবিক মৃত্যু যন্ত্রণা উপভোগ করছে তাবৎ বিশ্ব। তিনি রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ষায় জাতিসংঘ, ওআইসি সহ সকল মানবাধিকার সংস্থা সমূহকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ইতিবাচক পদক্ষেপে এগিয়ে আসার জন্য আহবান জানান।

ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব জাতীয় নেতা অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর বলেছেন,- মিয়ানমার যেন এক মৃত্যুপুরী। রাজপথে, লোকালয়ে ,বন-জঙ্গলে খন্ডিত ও ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় দৃশ্যমান নিথর-নিস্তব্ধ রোহিঙ্গা মুসলমানদের লাশ আর লাশ। শৃগাল – কুকুরে টানাটানি করছে এসব লাশ। দাফন-কাফনও জুটছেনা ভাগ্য বিড়ম্বিত এসব রোহিঙ্গা মুসলমানদের। গ্রামের পর গ্রাম ভষ্মিভুত হচ্ছে রোহিঙ্গাদের বাড়ী-ঘর। জনশূন্য হয়ে পড়েছে অসংখ্য গ্রাম। মিয়ানমারে নির্বিচারে এহেন মুসলিম গণহত্যাকে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম বর্বরতা বলে উল্লেখ করে তিনি অবিলম্বে এ সহিংসতা বন্ধের দাবী জানান। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারেরই নাগরিক। এদের জন্য রাখাইনে নিরাপত্তা অঞ্চল প্রতিষ্ঠা সহ এদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। শুধু জাতিগত পরিচয়ের কারণে কারও উপর দমন-পিড়ন কোন বিচারেই সমর্থনযোগ্য নয়। এটি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। আধুনিক সভ্যতায় কাউকে জাতিগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করার কোন সুযোগ নেই। রোহিঙ্গা গণহত্যা ও জাতিগত নিধন বন্ধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়কে কঠোর পদক্ষেপে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে তিনি আরও বলেন,- বাংলাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ লক্ষেরও অধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। যা মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত। ১৬ কোটি মানুষের একটি দরিদ্র দেশে এতো রোহিঙ্গার ভার সইবার ক্ষমতা এদেশের নেই। এরা যদি বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করে তাহলে এদেশের পরিবেশ ও সামাজিক বিপর্যয়ের সমূহ আশংকা রয়েছে। ইতোমধ্যে টেকনাফ সহ কক্সবাজার অঞ্চলে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। যার অশুভ প্রভাবে বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী ক্রয়ক্ষমতা বহির্ভুত হয়ে পড়েছে। প্রধান বক্তা এম সোলায়মান ফরিদ বলেছেন,- ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! আরাকানে একসময়কার মুসলিম রাজশক্তির অংশ রোহিঙ্গা মুসলমানরা এখন নিজ দেশেই স্মরণার্থী। এদেরকে মিয়ানমারে বসতি স্থাপনকারী অবৈধ বাঙালি অভিবাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। ফলে তারা তাদের জাতিসত্ত্বার পরিচয় দিতে পারেনা। এরা ভোটাধিকার থেকেও বঞ্চিত। বিয়ে-শাদী করারও অনুমতি মিলে না এদের। সন্তান-সন্তুতিদেরও জন্ম নিবন্ধন দেয়া হয়না। এদের বংশ বিস্তার ঠেকাতে এ যাবত কতই না বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। যা আধুনিক সভ্যাতায় কখনও কল্পনা করা যায়না। সভাপতির বক্তব্যে স ম হামেদ হোসাইন বলেন,- রোহিঙ্গারাও মানুষ। এদের রক্তে রক্তাক্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত আরাকানের মাটি। কোনভাবেই থামছেনা মিয়ানমারের সামরিক জান্তার এ অমানবিক হত্যাযজ্ঞ। এদের সুরক্ষায় বিশ্ব বিবেকের জাগরণ এখন সময়ের দাবী। ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ও ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে অদ্য ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ইং রোববার বিকেল ৩টায় মিয়ানমারে নির্বিচারে রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যার প্রতিবাদে শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত বিশাল গণজমায়েতে বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইসলামিক ফ্রন্টের সভাপতি স ম হামেদ হোসাইন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণজমায়েতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম সোলায়মান ফরিদ। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা এম মনির হোসাইন।

Comments

comments